শিরোনাম

প্রকাশঃ Mon, Jul 4, 2022 4:54 AM
আপডেটঃ Fri, Mar 7, 2025 5:03 AM


৬০, ৭০ দশকের জনপ্রিয় ছাত্রনেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার সিকদারের শুভ জন্মদিন

৬০, ৭০ দশকের জনপ্রিয় ছাত্রনেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার সিকদারের শুভ জন্মদিন
মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক বীর মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার হোসেন সিকদার ১৯৫২ সালের ৩ জুলাই চাঁদপুর জেলার কচুয়া থানায় লুন্তি গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন৷ তাঁহার পিতার নাম মৌলভী সুজাত হোসেন সিকদার ও মাতার নাম হালিমা খাতুন৷ তাঁহার পরিবারে তারা পাঁচ ভাই ও তিন বোন৷ প্রাথমিক বিদ্যালয় লেখাপড়া শেষে তিনি কচুয়া সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয় (বর্তমান কচুয়া সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়) থেকে ১৯৭০ সালে মেট্রিক পরীক্ষায় কৃতিত্বের সাথে উত্তীর্ণ হন৷ ১৯৭০ সালে প্রতিষ্ঠিত কচুয়া বঙ্গবন্ধু ডিগ্রি কলেজে তিনি প্রতিষ্ঠাকালীন প্রথম ব্যাচের ছাত্র হিসেবে ভর্তি হন৷ লেখাপড়া অবস্থায় হাই স্কুলে থাকতেই তিনি ছাত্র রাজনীতির সাথে যুক্ত হন৷ 





পরবর্তীতে ১৯৬৮ সালে তিনি কচুয়া থানা ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাকালীন সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নির্বাচিত হন৷ ৬৯' এর ছাত্রলীগের ১১ দফা ভিত্তিক আইয়ুব বিরোধী গণঅভ্যুত্থান ও বঙ্গবন্ধুর মুক্তি আন্দোলন সহ ইয়াহিয়া খানের সামরিক শাসন বিরোধী আন্দোলনে তিনি কচুয়া থানা  ছাত্রলীগকে দুর্দমনীয় ভূমিকায় নেতৃত্ব দান করেন৷ ৭০ এর জাতীয় পরিষদ নির্বাচনে তিনি কচুয়া থানা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে কচুয়া এবং বরুরা এই দুই থানার সম্মিলিত আসনে নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী  এডভোকেট আবদুল আউয়াল এর পক্ষে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন৷ অনুরুপভাবে ৭০ এর প্রাদেসিক পরিষদ নির্বাচনে আলহাজ্ব সেকান্দার আলীর একান্ত বিশ্বস্ত সহযোগী হিসেবে অগ্রনী ভূমিকা পালন করেন৷ ৭০ এর নির্বাচনে আওয়ামীলীগের বিপুল ভোটে বিজয়ের পর বঙ্গবন্ধুর ডাকে অসহযোগ আন্দোলনে ছাত্রলীগের নেতৃত্ব দান করেন৷ 






১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণে উজ্জীবিত হয়ে মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক হিসেবে তিনি ছাত্র- জনতাকে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহনের জন্য অনুপ্রাণিত করেন৷  ৭১ এর ২৩ মার্চ পাকিস্তান প্রজাতন্ত্র দিবসে ছাত্রলীগের নেতৃত্বে কচুয়া বঙ্গবন্ধু কলেজ সহ বিভিন্ন অফিসে আনুষ্ঠানিকভাবে পাকিস্তানি পতাকা নামিয়ে পুড়িয়ে স্বাধীন বাংলার পতাকা উত্তোলন করেছিলেন৷ কচুয়া থানা আওয়ামীলীগের সংগ্রাম কমিটির সভাপতি এম এ রশিদ প্রধানের নেতৃত্বে কচুয়া হাই স্কুল মাঠে মুক্তিযুদ্ধের প্রাথমিক প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন৷ পাক-বাহিনী কচুয়া আগমনে প্রতিরোধ ব্যবস্থা জোরদার করতে তৎকালীন কচুয়া হতে চাঁদপুর-কুমিল্লা যাওয়ার একমাত্র পাকা রাস্তা লুন্তি গ্রামে তাঁহার বাড়ির সামনে পাকা রাস্তায় ট্রেন্স কেটে, কচুয়া ডাক বাংলার পূর্ব পাশের ব্রিজ ভেঙ্গে তিনি ও তাঁর সঙ্গীরা বিভিন্নভাবে প্রতিরোধ ব্যবস্থা জোরদার করে৷ উল্লিখিত তাঁহার বাড়ির সামনে অপারেশনটি চলাকালীন সময়ে মুক্তিযোদ্ধাদের থাকার ব্যবস্থা ও খাদ্যের যোগান দেন মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার সিকদারের "মা" হালিমা খাতুন৷ 



পরবর্তীতে কচুয়ায় পাক বাহিনীর অত্যাচারে টিকতে না পেরে অস্ত্রহাতে যুদ্ধ করতে উচ্চতর প্রশিক্ষণের জন্য সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের  হাতিমারা ও ছড়িলাম ক্যাম্পে প্রশিক্ষন গ্রহণ করে মহান মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন৷


স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশে তিনি কচুয়া উপজেলা ছাত্রলীগের দুই বারের সভাপতি নির্বাচিত হয়েছিলেন৷ একাধারে তিনি চাঁদপুর জেলা ছাত্রলীগের টানা দুই কমিটিতে সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন৷ তিনি ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও আওয়ামীলীগের বিভিন্ন পদে দায়িত্বে থাকার পর বর্তমানে কচুয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের উপদেষ্টা মণ্ডলীর সম্মানিত সদস্য৷ ছাত্রলীগের রাজনীতির সুবাদে তিনি বিভিন্ন সময় বঙ্গবন্ধুর সান্নিধ্য পেয়েছিলেন৷ 
পেশাগত কারণে তিনি কচুয়া উপজেলা কৃষি উন্নয়ন ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন৷
জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান ও সাবেক তুখোড় ছাত্রনেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার সিকদারের জন্মদিনে তাঁহার সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করছি৷


www.a2sys.co

আরো পড়ুন